রবিবার, ১লা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গাজীপুরে বিএনপি নেতাকে চাঁদা না দেয়ায় ডিলারকে হয়রানির অভিযোগ

শেয়ার করুনঃ

গাজীপুর সংবাদদাতা: গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জে বিএনপি নেতাদের দাবিকৃত চাঁদা না দেয়ায় সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর এক ডিলারকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় গত মার্চে ২৫ তারিখে ডিলার মজিবুর রহমানের নিকট লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে একটি পত্র দিয়েছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। পরবর্তীতে ওই পত্রের লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মজিবুর রহমান।
জানা যায়, জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার মোল্লা এবং যুবদল নেতা হান্নান দেওয়ান চাঁদা দাবী করে ডিলার মজিবুর রহমানের নিকট। সে চাঁদা দিতে অস্বিকার করায় তার বিরুদ্ধে উচ্চ মূল্যে সরকারী চাউল বিক্রয় করার অভিযোগ আনে।
মস্টাররোলের মাধ্যমে চাউল বিক্রির নির্ধারিত মূল্য ৪৫০ টাকা ৩০ কেজি পরিমান। তারা অভিযোগ আনে ৪৫০ টাকার চাউল ১ হাজার টাকায় বিক্রির।
ডিলার মজিবুর রহমান জানান, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চলতি মার্চ-২০২৫ সালের ১৬,৮৯০মে. টন সিদ্ধ চাউল আমি খাদ্য গুদাম হইতে উত্তোলন করে আমার গোডাউনে রেখে উপকার ভোগীদের নিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিতরণ করি। বিতরণকৃত চাউল আমি অন্যত্র বিক্রি করি নি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় উচ্চ মূল্যে চাউল বিক্রির।
অথচ আমার বিতরণ করা চাউল দুই তিনজন ব্যাক্তির বাড়ীতে নিয়ে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করে। তা আমার জানা ছিল না, আমি পরবর্তীতে জানতে পারি। নির্ধারিত মূল্য চারশত পঞ্চাশ টাকায় আমি বিক্রি করি। এ বিষয়ে কোন ভোক্তার অভিযোগ নেই। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য একটি পত্র দেয়া হয়েছে।
মূলত চাঁদা না দেওয়ার কারণে আমাকে মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানি করছে দেলোয়ার মোল্লা ও হান্নান দেওয়ান। তারা আমার কাছে চাঁদা দাবী করলে আমি চাঁদা দিতে অস্বিকার করায় আমার বিরুদ্ধে উচ্চ মূল্যে সরকারী চাউল বিক্রয় করার মিথ্যা অভিযোগ আনে।
আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বীকারোক্তি ভিডিও ধারন করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া মৃত ব্যক্তি ও বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির পরিবারকে টেক অফিসার নাজমুল হক ভূঁঞার অনুমতিতে এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যের লিখিত ও স্বাক্ষরকৃত কাগজের মাধ্যমে চাউল বিক্রয় করা হয়।
আনিত মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে আমার কাছে প্রমান স্বরূপ ভিডিও ও অন্যান্য কাগজপত্র রয়েছে। তাই বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমি নির্দোশ প্রমানিত হব।
এ ঘটনার পর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত গত মার্চে ২৫ তারিখে একটি পত্রে ডিলার মজিবুর রহমানের লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে উল্লেখ করা হয়, খাদ্যবান্ধব খাতে বিতরণের জন্য আপনার অনুকুলে ১৬.৮৯০ মেঃ টন সিদ্ধচালের ডিও ইস্যু করা হয়।
ইস্যুকৃত ডিও’র চাল গুদাম হতে উত্তোলন করে তালিকাভুক্ত ও কার্ডধারী উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করার নিয়ম। কিন্তু আপনি উক্ত এ চাল তালিকাভুক্ত ভোক্তাদের মাঝে বিতরণ না করে প্রতি বস্তা ১০০০/১১০০ টাকা দরে অন্যত্র বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর কারণ জানা প্রয়োজন।
হতদরিদ্র তালিকাভুক্ত কার্ডধারী ভোক্তাদের মাঝে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দরে চাল বিক্রয় না করে অন্যত্র অধিক মূল্যে চাল বিক্রয় করে আপনি সরকারের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কালোবাজারি করেছেন।
এরূপ কর্মকান্ডের জন্য ডিলারশীপ বাতিল করে কেন আপনার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার ব্যাখ্যা পত্র প্রাপ্তির তিন কর্ম দিবসের মধ্যে উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। সময়ের মধ্যে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হলে বিষয়টি একতরফা নিষ্পত্তি করা হবে।
পরবর্তীতে ডিলার মজিবুর রহমান ওই পত্রে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এবিষয়ে অভিযুক্ত দেলোয়ার মোল্লা জানান, ডিলার মজিবুরের খাদ্যবান্ধব চাউল বিক্রির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কে বা কারা অভিযোগ করেছে তার জানা নেই। তার কাছে কোন চাঁদা চাওয়া হনি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত হান্নান দেওয়ান জানান. মজিবুরের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব চাউল উচ্চ মূল্যে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।  তবে তার বিরুদ্ধ আমি কোথাও কোন অভিযোগ করি নি বা তার কাছে কোন প্রকার চাঁদা চাওয়া হয়নি।

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০